উপদেশ দ্বিতীয় পর্ব

 

উপদেশ দ্বিতীয় পর্ব

* বেহুদা কথা না বলাঃ কখনও বেহুদা, বেফায়দা কথা বলবে না।
বিনা প্রয়োজনে কোন কথা বলবে না।
বরং চুপ থাকবে।
কম কথা বলবে।
প্রয়োজন যতটুকু ততটুকু কথা বলবে।
বেশি কথা বলবে না।
তোমার জিহ্বাকে আল্লাহর যিকির দ্বারা চালু রাখবে। মনে আল্লাহর প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা রাখবে। অন্যায় কাজে পা বাড়াবে না।

* কৃপণতা না করাঃ কৃপণতা করা ভাল নয়।
কৃপণকে আল্লাহ পাক ভালবাসেন না।
কৃপণের প্রতি আল্লাহ দয়া করেন না।
সাধ্যনুযায়ী দান খয়রাত করবে।
দান-খয়রাতে ধন বাড়ে।
আল্লাহ খুশী হন।
আল্লাহ যাতে খুশী হন, সদা সেই কাজ করবে।

* গালিগালাজ না করাঃ কাউকে গালি-গালাজ
 করবে না।
কটুকথা বলবে না, কর্কষ স্বরে কথা বলবে না।
ধিক্কার দিবে না।
মন্দ বলবে না।
মুখ খারাপ করবে না।

* ওয়াদা পূরণ করাঃ যার সঙ্গে যা ওয়াদা করবে, তা অবশ্যই পূরণ করবে।
ওয়াদা খেলাফ খুব খারাপ কাজ।
কদাচ ওয়াদা খেলাফ করবে না।

* হাসিমুখে কথা বলাঃ সর্বদা হাসি মুখে কথা বলবে।মিষ্টি ভাষায় কথা বলবে।
কর্কষ বা কটু ব্যবহার করবে না।
মুখ বাঁকা করে, অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে কথা বলবে না। খামাখা কারো মনে কষ্ট দিবে না।

* লজ্জা শরম থাকাঃ প্রতিটি ব্যক্তির লজ্জা শরম থাকা বাঞ্ছনীয়।
লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।
লজ্জা শরম মানুষের ভূষণ।
অতএব, তোমাদের মধ্যে অবশ্যই লজ্জা-শরম থাকতে হবে।
প্রতিজন ব্যক্তিকে লজ্জাশীল হতে হবে।

* আল্লাহর উপর ভরসা করাঃ সব কাজে আল্লাহর উপর ভরসা করবে।
যারা আল্লাহর উপর ভরসা করে, আল্লাহ পাক তাদের ভালোবাসেন।
তাদের আশা পূরণ করে দেন।

* সৎসঙ্গ গ্রহণ করাঃ তোমরা সর্বদা সৎসঙ্গ গ্রহণ করবে।
যারা সৎ তাদের সাথে চলা ফেরা, ওঠা-বসা করবে।যারা অসৎ কখনও তাদের সঙ্গে চলা ফেরা, ওঠাবসা করবে না।
প্রবাদ আছে-সৎ সঙ্গ জান্নাত বাস,অসৎ সঙ্গ সর্বনাশ।

* বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করাঃ সর্বদা বিপদগ্রস্তদের সাধ্যনুযায়ী সাহায্য করবে।
 বস্ত্রহীনকে বস্ত্রদান, অন্যহীনকে অন্নদান, গৃহহীনকে গৃহ দান, আশ্রয়হীনকে আশ্রয় দান ও সম্বলহীনকে সম্বল দান করা উত্তম।
যারা এই ভাল কাজগুলো করবে, কিয়ামতে আল্লাহ পাক তাদের সাহায্য করবেন।

* বিলাসিতাঃ সাবধান! কখনও বিলাসিতা করবে না। বিলাসিতা পতন ডেকে আনে।
আল্লাহ পাক ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিলাসিতা পছন্দ করেন না।

* শিশুদের জন্য করনীয়ঃ যখন শিশুরা জন্মগ্রহণ করে তখন বিনা দরকারে সেখানে কোন আওয়াজ থাকতে পারবে না।
দরকার হলে আসতে বলবে বা ইশারায় বলবে।
শিশুকে প্রথমে গোসল করাবে।
তারপর নিম্নস্বরে ডান কানে আযান ও বাম কানে ইকামত দিবে।
ছেলে হোক বা মেয়ে হোক, সবার কানে আযান ইকামত দিতে হবে।
পুরুষ লোক না থাকলে মহিলারাই আযান ইকামত দিবে।
 সপ্তম দিনে মাথা কামিয়ে ফেলবে।
চুলের সমওজনের স্বর্ণ বা রৌপ্য দান-খয়রাত করে দিবে।
ছেলেকে খাতনা করাবে।
সুন্দর নাম রাখবে।
আকিকা করবে।
শিশুরা শব্দ বলা শিখলে আল্লাহ শিখাবে।
কথা বলা শিখলে কালেমায়ে তাইয়্যেবা ও সালাম বলা শিখাবে।
পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়স হলে কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত শেখার মাধ্যমে শিক্ষা জীবন শুরু করাবে।

* নিয়ত দোরস্ত করাঃ তোমরা যে কোন কাজ করবে, তার পূর্বে নিয়্যত দোরস্ত করে নিবে।
আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ইন্নামাল আ'মালু বিন্নিয়াত সব কাজই নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল।
নিয়্যাত খাটি হলে, কাজের সুফল পাবে।
সওয়াব পাবে।
নিয়্যাত-এর মানে হলঃ মনের ধারণা, কাজের ইচ্ছা। কাজেই তোমরা যখন যে কাজ করবে, মনের ধারণা বা ইচ্ছাকে খাঁটি করে কাজ করবে।
যেমন-তুমি কিছু দান করলে।
কিন্তু এ দান যদি মানুষকে দেখাবার জন্যে বা বাহবা পাবার জন্যে করে থাক, তা হলে এ দানের সওয়াব পাবে না।
তাই দান করার সময় তোমার মনের ধারণা বা কামনা থাকবে যে, দান করছি উপকার করার জন্যে এবং আল্লাহ পাককে  খুশী করার জন্যে।
তখন তুমি সওয়াব পাবে।
আরো যেমন তুমি মাদ্রাসায় পড়ছ।
তোমার মনের ধারণা বা কামনা যদি এ হয় যে, তুমি আলেম হলে, সমাজে সম্মান পাবে বা বড় পদে চাকুরী করবে, তা হলে তোমার এ ইলম দ্বারা
তুমি উপকৃত হবে না।
সমাজও উপকৃত হবে না।
আল্লাহ পাকও সন্তুষ্ট হবে না, কোন সওয়াবও পাবে না, পরকালেও কোন কল্যাণ পাবে না।
কেননা তোমার নিয়্যাত সহী হয় নাই।
ইলম শেখার নিয়্যাত হতে হবে-একমাত্র আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করা।
নিয়্যাতে ইলম শিখলে ইহকালে সম্মান পাবে, তুমি নিজে উপকৃত হবে, জনগণ উপকৃত হবে।
আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন এবং পরকালে আল্লাহ পাক ইলমের বিনিময় প্রদান করবেন।
অতএব যে কোন কাজ করবে, তখন মনের ধারণা ও কামনা থাকতে হবেঃ আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভ করা। তা হলে তোমার এ কাজ সফল হল।

* স্বাস্থ্য রক্ষাঃ ভোর বেলার ভ্রমণ ও স্বাস্থ্য চর্চা খুবই উপকারী।
প্রত্যহ কিছু সময় নিয়মিত ব্যায়াম করবে।
খাওয়া-দাওয়ার নিয়ম রক্ষা করে চলবে।
খাওয়ার অল্প পূর্বে কোন কিছু খাবে না।
প্রত্যহ একই সময়ে খাওয়া-দাওয়া করবে।
যা খেতে পারবে তার তিন ভাগের দুইভাগ খাবে।
এক ভাগ পরিমাণ পেট খালি রাখবে।
খাওয়ার ভিতর বা পরে বিনা প্রয়োজনে পানি পান করবে না।
অন্তত অর্ধ ঘন্টা পর পেট ভরে পানি পান করবে।
সকাল বেলায় খালি পেটে প্রচুর পানি পান করবে। শহরের পানি প্রথমে কাপড় দ্বারা চেকে নিবে।
তারপর ফুটিয়ে ঠান্ডা করে খাবে।
টিউবওয়েলের পানি আধ ঘন্টা রেখে পান করবে।
তবে বাসি পানি পান করবে না।
গোশত ও মাছ এক সঙ্গে খাবে না।
যে বেলা মাছ খাবে ঐ বেলা গোশত খাবে না।
যে বেলা গোশত খাবে সে বেলা মাছ খাবে না।
ফলফলাদি খাওয়ার পর পানি পান করবে না।

* যেখানে সেখানে থু-থু / পিক/কফ না ফেলাঃ কখনও যেখানে সেখানে থু-থু বা পিক বা কফ ফেলবে না।
থু-থু/পিক/কফ ফেলে ঘর বাড়ী, দেয়াল,দরজা, আঙ্গিনা, রাস্তা-ঘাট অপরিচ্ছন্ন করবে না।

* সুগন্ধি ব্যবহার করাঃ সর্বদা সুগন্ধি ব্যবহার করবে। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সার্বদা সুগন্ধি ব্যবহার করতেন।

* সুরমা ব্যবহার করাঃ শোয়ার পূর্বে উভয় চোখে  তিনবার সুরমা ব্যবহার করবে।

* আজকের শিশুরাই আগামী দিন দেশের পরিচালক, তোমরা আজ যারা শিশু, আগামীতে তোমরা লেখা পড়া করে বড় বড় আলেম হবে, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক হবে, দেশের পরিচালক হবে।
 তাই, তোমরা ভাল ভাবে লেখাপড়া করবে।
উচ্চ ডিগ্রী অর্জন করবে।
সাথে সাথে ভাল ভাল চরিত্রও অর্জন করবে।
মনে রাখবে বড় বড় ডিগ্রি অর্জন করলেই, মানুষ হওয়া যায় না, জ্ঞানী হওয়া যায় না।
মানুষ ও জ্ঞানী হতে চাইলে ভাল ভাল চরিত্র অর্জন করতে হবে।
চরিত্রহীন মানুষ পশুর চেয়েও অধম।
তোমাদেরকে খোদাভীরু হতে হবে।
নবীর প্রেমিক হতে হবে।
সেই সাথে ইসলামের উপর অগাধ বিশ্বাস রাখতে হবে। খাঁটি দেশ প্রেমিক হতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম স্যার কেমন আছেন?

RBFried থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.