নামাযের ফরযসমূহ



নামাযের ফরযসমূহ

নামাযের ফরয তেরটি।
সাতটি নামাযের বাইরে।
ছয়টি নামাযের ভেতরে।
নামাযের বাইরের সাতটি ফরয হলো- শরীর পবিত্র হওয়া, কাপড় পবিত্র হওয়া, নামাজের স্থান পবিত্র হওয়া, সতর ঢাকা, সময় মত নামায পড়া, কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানো, অন্তরে নামাযের নিয়্যত করা, যেমন মনে মনে ভাবা, আমি এখন ফজরের ফরয নামাজ পড়ছি। মুখে নামাযের নিয়্যত করা জরুরী নয়।
মন চাইলে করবে না চাইলে না করবে।
যদি কারও শরীরে ফোঁড়া কিংবা অন্য কোন এমন জখম থাকে যা থেকে সর্বদাই পূঁজ পড়তে থাকে; কিংবা কারও সর্বদাই প্রস্রাব ঝরতে থাকে অথবা সর্বক্ষণ বায়ু বের হতেই থাকে বা পাতলা পায়খানা অনবরত চলছে, কিংবা নাক দিয়ে রক্ত ঝরছেই, তাহলে এই ব্যক্তি প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাযের জন্যে নতুন ওযু করে নিবে এবং নিশ্চিন্তে নামায আদায় করবে।
নামায বর্জন করবে না।
তবে নামাযের সময় পার হবার সঙ্গে সঙ্গে তার ওযুও ভেঙ্গে যাবে।

পুরুষের সতর হলো নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত।
তাই নাভি থেকে হাঁটুসহ ঢেকে রাখা ফরয।
আযাদ নারীর সতর হলো মুখ, দুই হাতের তালু এবং  উভয় পায়ের পাতা ছাড়া পুরো শরীর।
আর বাঁদীর জন্যে পেট-পিট- হাঁটুসহ ঢেকে রাখা ফরয। অবশিষ্ট অংশ ঢেকে রাখা মুসতাহাব- উত্তম।
যতটুকু ঢেকে রাখা ফরয তার মধ্য থেকে যে কোন অঙ্গের যদি এক চতুর্থাংশ নামাযের মধ্যে বিবস্ত্র হয়ে যায় তাহলে নামায নষ্ট হয়ে যাবে।
যেমন উরুর এক চতুর্থাংশ কিংবা গুপ্তাঙ্গ বা নিতম্বের এক চতুর্থাংশ উন্মুক্ত হয়ে পড়ল অথবা কোন মহিলার মাথা বা অন্য কোন অঙ্গের এক চতুর্থাংশ আবরণমুক্ত হয়ে পড়ল-নামায নষ্ট হয়ে গেল।

কাপড় না থাকলে বিবস্ত্র অবস্থায় নামায পড়বে তবু নামায ছাড়বে না।
নামায ছেড়ে দেয়া অনেক বড় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যদি কারও কাছে পাগড়ী জামা-কোর্তা থাকে তাহলে শুধু টুপি অথবা শুধু লুঙ্গি পরে নামায পড়া মাকরুহ। এতে সওয়াব কমে যায়।
তবে ফরয সতর ঢাকা থাকলে নামাজ নষ্ট হবে না।

নামাযী এমন বনভূমিতে আছে যেখানে কিবলা কোন দিকে বুঝা যায় না।
ঝড় কিংবা আঁধার রাত।
কিবলা জিজ্ঞেস করার মত কোন লোকও নেই। এমতাবস্থায় গভীরভাবে চিন্তা করবে কিবলা কোন দিকে হতে পারে।
অতঃপর অন্তর যে দিকে সাক্ষ্য দিবে সে দিকে ফিরেই নামায পড়ে নেবে।
চিন্তা-ফিকির ছাড়াই পড়ে নিলে নামায হবে না।
যদি কয়েকজন থাকে তাহলে সকলেই নিজ নিজ চিন্তা ও অনুমানের ভিত্তিতে নামাজ আদায় করবে।

নামাযের সময় খুবই প্রসিদ্ধ।
তবে মুস্তাহাব হলো, ফজরের নামায একটু দেরী করে পড়া।
গরমের মৌসুমে যোহর নামাযও একটু দেরী করে পড়বে।
বৃষ্টির দিনে মাগরিব নামায একটু দেরী করে পড়বে। ইশার নামায রাতের এক তৃতীয়াংশ পার হবার পর পড়বে।
অন্যান্য নামায প্রথম ওয়াক্তে পড়াই উত্তম।
সূর্য ওঠার সময় ডুবার সময় এবং ঠিক দুপুরে নামায পড়া নাজায়েয।
ফরয নফল জানাযা সিজদায়ে তিলাওয়াত-সবই নিষেধ।
তবে যদি কেউ আসর না পড়ে থাকে তাহলে অগত্যা সূর্য ডুবার সময় পড়ে নিবে।

ফজর নামাযের পর সূর্য ওঠার পর্বে এবং আসর নামাযের পর সূর্য ডুবার পূর্বে নফল নামায পড়া মাকরুহ।
তবে কাযা নামায পড়া মাকারুহ নয়।

নামাযের ভেতরকার ছয়টি ফরয হলো- তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ 'আল্লাহু আকবার' বলে নামায শুরু করা।
দাঁড়িয়ে নামায পড়া।
কিরাত পড়া অর্থাৎ কুরআন শরীফ থেকে সামান্য তিলাওয়াত করা।
রুকু করা।
প্রত্যেক রাকআতে দুই সিজদা করা।
শেষ বৈঠকে 'আত্-তাহিয়্যাতু' পাঠ করতে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু সময় বসা।
       ফরয এবং বিতর নামায অসুস্থতা ছাড়া বসে পড়া জায়েজ নয়।
তবে সুন্নত এবং নফল বসে পড়া জায়েয আছে।
অবশ্য দাঁড়িয়ে পড়লে অনেক বেশী সওয়াব পাওয়া যায়।
এই হলো নামাযের তের ফরয।
যদি এর একটিও ছুটে যায় নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। নামায পুনরায় আদায় করতে হবে।
ইমাম আযম আবু হানীফা রহমাতুল্লাহ আলাইহি -এর মাযহাব মতে নামাযে কুরআনে কারীমের এক আয়াত পরিমাণ পাঠ করা ফরয।
এক আয়াতের চাইতে বেশী পড়া ওয়াজিব কিংবা সুন্নত।
কিন্তু অন্যান্য ইমামগণের মতে পুরো 'আল-হামদু' অর্থাৎ সূরা ফাতিহা পাঠ করা ফরয।

ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকআতে কিরাত পড়া ফরয, অবশিষ্ট রাকআতে সুন্নত।
কিন্তু বিতর সুন্নত ও নফল নামাযের প্রত্যেক রাকআতেই কিরাত পড়া ফরয।



নামাযের  বাহিরে এবং ভিতরে ১৩ ফরয
নামাযের বাহিরে ৭ ফরযঃ

১) শরীর পাক।

২) কাপড় পাক।

৩) নামাযের জায়গা পাক।

৪) ছতর ঢাকা।

৫) কেবলামুখী হওয়া।

৬) ওয়াক্ত মত নামায পড়া।

৭) নামাযের নিয়ত করা।

নামাযের ভিতরে ৬ ফরযঃ

১) তাকবীরে তাহরীমা বলা।

২) খাড়া হইয়া নামায পড়া।

৩) কেরাত পড়া।

৪)  রুকু করা।

৫)  দুই সেজদা করা।

৬)  আখেরী বৈঠক।

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম স্যার কেমন আছেন?

RBFried থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.