নামাযের ওয়াজিব সমূহ


নামাযের ওয়াজিব সমূহ
নামাযের ওয়াজিব চৌদ্দটি।
সূরা ফাতিহা পড়া।
সূরা ফাতিহার সাথে অন্য কোন সুরা মিলানো।
রুকু -সিজদায় দেরী করা।
রুকু থেকে ওঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তারপর সিজদায় যাওয়া।
দুই সিজদার মাঝখানে বসা।
নামাজের মাঝে 'আত-তাহিয়্যাহ্' এর জন্যে বসা।
উভয় বৈঠকে 'আত-তাহিয়্যাহ্' পাঠ করা।
ইমামের জন্যে যেখানে শব্দ করে কিরাত পড়ার সেখানে শব্দ করে পড়া, যেখানে নিঃশব্দে পড়ার সেখানে নিঃশব্দে পড়া।
নামাযের শেষে 'আস-সালামু আলাইকুম
ওয়া রাহমাতুল্লাহ' বলা।
বিতর নামাযে দু'আ কুনূত পাঠ করা।
উভয় ঈদের নামাযে ছয়টি করে তাকবীর বলা।
চার রাকআত ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকআতকে কিরাতের জন্যে নির্ধারণ করা।
যেসব ফরয আমল প্রতি রাকআতে বার বার আসে সেগুলোর ক্ষেত্রে তারতীব তথা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
প্রতিটি ওয়াজিবের ক্ষেত্রেও তারতীবের দৃষ্টি রাখা।

     এই ছিল নামাযের মোট চৌদ্দটি ওয়াজিব।
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এর একটিও ছেড়ে দেয় তাহলে তার নামায ভেঙ্গে যায় না, তবে খুবই অপছন্দনীয় ও মাকরুহ হয়।
তাই সেই নামাযটি পুনরায় পড়া ওয়াজিব হয়ে পড়ে। কিন্তু কেউ যদি ভুল করে একটি বা একাধিক ওয়াজিব ছেড়ে দেয় এবং নামাযের শেষে 'সিজদায়ে সাহু' করে নেয় তাহলে তার নামায সহীহ হয়ে যাবে।
আর যদি 'সিজদায়ে সাহু' না করে থাকে তাহলে
নামাযটি পুনর্বার পড়া ওয়াজিব।
যদি না পড়ে তাহলে 'ফরয' আদায় হয়ে যাবে কিন্তু 'ওয়াজিব' তরক করার গোনাহ হবে।

'সিজদায়ে সাহু' আদায় করার নিয়ম হলো, সর্বশেষ    আত-তাহিয়্যাহ্ পাঠ করার পর শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে পুনরায় দুটি সিজদা করবে।
অতঃপর দুরুদশরীফসহ আত-তাহিয়্যাহ্ পাট পূর্বক উভয় দিকে সালাম ফিরাবে।

     প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য হলো, সূরা ফাতিহাসহ আরও কয়েকটি সূরা এবং যেসব দু'আ-দুরুদ নামাযের মধ্যে পাঠ করা হয় তা বিশুদ্ধভাবে শিখে নেয়া।
অন্যথায় গোনাহগার হবে।
বরং কোন কোন ভুল এমন আছে, যার কারণে নামায ভঙ্গ হয়ে যায়।

   যদি সূরা ফাতিহার পূর্বে ভুলবশত অন্য কোন সূরা অথবা পুর্ণ একটি আয়াতও পাঠ করে ফেলে তাহলেও সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়ে যাবে।
যদি প্রথম অথবা দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ফাতিহার পর অন্য সূরা পড়তে ভূলে যায় তাহলে তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাকআতে সূরা ফাতিহার পর তা পড়ে নিবে।
এবং সাহু সিজদা করে নিবে।

         ইমামের ওপর ওয়াজিব হলো, ফজর, মাগরিব ও ইশার প্রথম দুই রাকআত, জুমুআ ও ঈদের নামায এবং তারাবীহ'র সকল রাকআতে কিরাত উচ্চস্বরে পড়া।
চাই সেটা কাযা নামায হোক বা আদা নামায হোক।
যদি ভূলবশত আস্তে পড়ে ফেলে তাহলে সাহু সিজদা করে নিবে।

      আর যে ব্যক্তি একা পড়বে সে ইচ্ছা করলে এসব নামাযে কিরাত উচ্চস্বরেও পড়তে পারে আবার আসতেও কড়তে পারে।
তবে যদি নামায 'আদা' অর্থাৎ যথা সময়ে পড়ে তাহলে কিরাত উচ্চস্বরে পড়াই উত্তম।
আর যদি একা একা একা কাযা পড়ে তাহলে আস্তে আস্তে পড়বে।
উচ্চস্বরে পড়া জায়েয নেই।
যোহর ও আসর নামাযে এবং দিবসকালীন সকল নফল নামাযে কিরাত আস্তে পড়বে।
উচ্চস্বরে পড়া এসব নামাযে নাজায়েয।

     যদি দুই রাকআতের পর আত-তাহিয়্যাহ্  পড়ার জন্যে বসতে ভূলে যায় তাহলে সোজা হয়ে না দাঁড়ানো পর্যন্ত মনে পড়লে বসে পড়বে এবং
আত-তাহিয়্যাহ্  পড়ে সাহু সিজদা করে নিবে।
আর দাঁড়িয়ে গিয়ে থাকলে আর বসবে না।
নামায শেষে সাহু সিজদা করে নিবে।
সোজা দাঁড়াবার পর যদি কেউ পুনরায় বসে পড়ে তাহলে তার নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে।

    যদি কেউ চার রাকআত পড়ে পঞ্চম রাকআতের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে যায় এবং  আত-তাহিয়্যাহ্ পড়া ভুলে যায়, তাহলে পঞ্চম রাকআতের সিজদা না করা পর্যন্ত মনে হলে বসে পাড়বে।
তারপর আত-তাহিয়্যাহ্ পড়ে সাহু সিজদা করে সালাম ফিরালেই নামায ঠিক হয়ে যাবে।
যদি পঞ্চম রাকআতের সিজদা করে ফেলে তাহলে। 'ফরয' বাতিল হয়ে যাবে।
এটা নফল নামাযে রূপান্তরিত হয়ে যাবে।
এখন সে আত-তহিয়্যাহ পড়ে সাহু সিজদা করে সালাম ফিরিয়ে নেবে।
এতে চার রাকআত নফল হিসাবে গণ্য হবে আর এক রাকআত অনর্থক গেল।
আর যদি চায় তাহলে এই পঞ্চম রাকআতের সাথে আরেক রাকআত যোগ করে ছয় রাকআত পূর্ণ করে সাহু সিজদা করে সালাম ফিরিয়ে নিতে পারে।
তাহলে ছয় রাকআতই নফল হয়ে যাবে।
আর যদি চতুর্থ রাকআতে আত-তাহিয়্যাহ্  পাঠ করার পর পঞ্চম রাকআতের উদ্দেশে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে মনে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বসে সাহু সিজদাহসহ সালাম ফিরিয়ে নিবে।
আর যদি পঞ্চম রাকআতের পর তার সাথে ষষ্ঠ রাকআত যুক্ত করে সাহু সিজদাসহ সালাম ফিরিয়ে নেয় তাহলেও নামায সহীহ হবে।
চার রাকআত ফরয আর দুই রাকআত নফল হয়ে যাবে।


নামাযের ওয়াজিব ১৪ টি

মাসআলাহ্ঃ নামাযের ভূলবশতঃ কোন ওয়াজিব ছুটিয়া গেলে নামায শেষে সাজদায়ে সাহু করিলে নামায হইয়া যায়।

তবে ইচ্ছাকৃত ওয়াজিব তরক করিলে নামায পুনরায় পড়িতে হয়।

১) আলহামদু শরীফ পুরা পড়া।

২)  আলহামদুর সঙ্গে সূরা মিলান।

৩)  রুকু সেজদায় দেরী করা।

৪) রুকু হইতে সোজা হইয়া খাড়া হইয়া দেরী করা।

৫)  দুই সেজদার মাঝখানে সোজা হইয়া বসিয়া দেরী করা।

৬) দরমিয়ানী বৈঠক।

৭) দোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়া।

৮)  ইমামের জন্য কেরাত আস্তে এবং জোরে পড়া।

৯) বিতরের নামাযে দু'আয়ে  কুনূত পড়া।

১০)  দোন ঈদের নামাযে ছয় ছয় তাকবীর বলা।

১১)  প্রত্যেক ফরয নামাযের প্রতম দুই রাকাতকে কেরাতের জন্য নির্ধারিত করা।

১২)  প্রত্যেক রাকাতের ফরযগুলির তারতীব ঠিক রাখা।

১৩)  প্রত্যেক রাকাতের ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা।

১৪)  আস্সালামু আলাইকুম বলিয়া নামায শেষ করা।

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম স্যার কেমন আছেন?

RBFried থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.