রোযা এবং তারাবীহ নামায
রোজার বিবরণ
আরবী বৎসরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমাম্বিত মাস রমজানুল মোবারক।
এই মাসে দিনের বেলায় রোজা রাখা ফরজ।
আর রাতের বেলায় তারাবীহ আদায় করা সুন্নত।
এই মাসে নফল ফরজের সমান এবং প্রতিটি ফরজ ৭০টি ফরজের সমান।
এই মাসে গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় এবং মুমিনের রিযিক বাড়িয়ে দেয়া হয়।
রোজাদারের জন্য সমুদ্রের মৎস পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে।
রোযাদারের দোয়ার প্রতি ফেরেশতারা আমীন, আমীন বলতে থাকে।
আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য সুবহে সাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যাবতীয় পানাহার ও যৌন সম্ভোগ হইতে বিরত থাকাকে রোজা বলে।
রোজা তিন রকমেরঃ
(১) ফরজ রোযা, (২) ওয়াজিব রোযা ও (৩) নফল রোযা।
ফরজ রোযা হইতেছে রমযানের রোযা এবং ক্বাজা ও কাফফারার রোযা, ওয়াজিব রোযা হইতেছে মানত রোযা, আর নফল রোযা হইতেছে ফরজ ওয়াজিব ব্যতীত সমস্ত রোযা।
বৎসরে পাঁচ দিন রোযা হারাম।
দুই ঈদের দুই দিন এবং কোরবানের পরের তিনদিন।
রোজার নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন্ আছুমা গাদাম্ মিন্ শাহরি রামাদ্বানাল মুবারাকি ফারদ্বাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নী ইন্নাকা আনতাস্ সামীউল আ'লীম। অর্থঃ হে আল্লাহ্! আমি আগামীকল্য রমযানের ফরজ রোযা রাখিবার নিয়ত করিলাম, আমার রোযা তুমি কবুল কর।
নিশ্চয়ই তুমি শোন ও জান।
ইফতারের দোয়া
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া 'আলা রিয্ক্বিকা আফ্ত্বারতু
বিরাহ্ মাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোযা রাখিয়াছি এবং তোমার দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করিতেছি, তোমার কৃপায়, হে কৃপাময় ও করুণাময়।
তারাবীহ নামাযের বিবরণ
রমজান মাসের প্রথম তারিখের চাঁদ দেখা হইতে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পূর্বে রাত্রি পর্যন্ত প্রতিদিন এশার নামাজের পরে বিতর নামাজের পূর্বে দুই রাকাত করে মোট বিশ রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। তারাবীহর নামাজ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
তারাবীহ নামাযের নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআ'লা রাকআ'তাই সালাতিত তারাবীহি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তাআ'লা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়তঃ আমি আল্লাহর জন্য ক্বেব্লামুখী হইয়া তারাবীহর দুই রাকাত সুন্নত নামায আরম্ভ করিতেছি, আল্লাহু আকবার। দুই রাকাতের পরে একবার দুরুদ শরীফ পড়িতে হয়।
চার রাকাতের পরে এই দোয়া পড়িতে হয়ঃ
উচ্চারণঃ সুবহানা যিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা যিল ইযযাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারুতি, সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাযী লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামুতূ আবাদান আবাদান্ সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালাইকাতি ওয়াররুহ্।
অর্থঃ আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি, যিনি বাদশাহ্ ও ফিরিশতাদের প্রভূ ও আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি।
যিনি মান-ইজ্জতের মালিক এবং যিনি ভয়, ক্ষমতা, গৌরবের মালিক।
আমি তাঁহারই পবিত্রতা প্রকাশ করিতেছি, যিনি চিরঞ্জিব, যাঁহার ফিরিশতাগণের এবং সকল
আত্মাদের প্রভু।
তারাবীহ নামাযের মুনাজাত
উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্আলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউযুবিকা মিনান্নার, ইয়া খালিকাল জান্নাতি ওয়ান্নারি, বিরাহমাতিকা ইয়া আযীযু, ইয়া গাফফারু ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তারু ইয়া রাহীমু ইয়া জাব্বারু, ইয়া খালিক্কু ইয়া বাররু।
আল্লাহুম্মা আজিরনা মিনান্নারি, ইয়া মুজীরু ইয়া মুজীর, বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে জান্নাত চাই, তোমারই কৃপায় হে জান্নাত-জাহান্নাম পয়দাকারী, হে ক্ষমতাবান, হে ক্ষমাশীল।
হে সর্ব সম্মানিত, হে দোষ গোপনকারী, হে মহব্বতকারী, হে শক্তিধর, হে সৃজনকারী, হে দয়াবান, হে আল্লাহ! রক্ষাকারী।
হে দয়াময়! তোমার দয়ায় কবুল কর।
